নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।।রাজধানীর যাত্রাবাড়ি থানার ছনটেক এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি প্রতারক চক্রের দুই নারীসহ চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১০।
চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে দলের নারী সদস্যদের ব্যবহার করে সমাজের প্রতিষ্ঠিত পুরুষদের টার্গেট করে নির্দিষ্ট ঠিকানায় ডেকে আনত। এরপর নারীদের সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এই সকল ভিডিও দেখিয়ে টাকা আদায়ের জন্য ব্লাকমেইল ও নির্যাতন করত। ঠিক একই কায়দায়।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) ছালাম সিকদার (৬০) নামের ব্যক্তিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে টাকা আদায়ের সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, চক্রের মূলহোতা ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে রানা (৩৪), মো. রবিউল ওরফে রবিউল হাসান (২৮), মোসা. জেসমিন বেগম ওরফে রিনা (৩০) ও পুতুল (২৮)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, একটি ওয়াকিটকি , ছয় টি মোবাইল ফোন। ভুক্তভোগীদের নির্যাতনে ব্যবহৃত টি হাতুড়ি, লাঠি, প্লাস ও মাল্টিপ্লাগ উদ্ধার করা হয়।
বৃহস্পতিবার ২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১০ এর সহকারী মিডিয়া কর্মকর্তা (এএসপি) এনায়েত কবির সোহেব।
তিনি জানান, প্রতারক চক্রের সদস্য জেসমিন ওরফে রিনা ভুক্তভোগী মো. ছালাম সিকদার (৬০)কে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেয়। সে রাজি হলে দিয়ে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী চক্রের ঠিক করে রাখা যাত্রাবাড়ী থানার ছনটেক এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চক্রের মূলহোতা রানা তার সহযোগীদের নিয়ে হাজির হয়। নিজেকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করে ও চক্রের নারী সদস্য রিনার সঙ্গে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এই সকল ভিডিও দিয়ে মামলা করা ও বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে।
তিনি আরও জানান, প্রতারক চক্রটির বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য পেয়ে যায় র্যাব-১০। পরবর্তীতে অভিযান চালিয়ে ভুক্তেভোগী ছালামকে উদ্ধার ও ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয় দেওয়া প্রতারক চক্রের মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
এবিষয় র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা নির্যাতন ও টাকা আদায়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
চক্রটি র্যাবকে আরও জানিয়েছে, তারা একটি প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাদের দলের মেয়েরা রাজধানীর যাত্রাবাড়ীসহ আশপাশের এলাকায় অর্থ-বিত্তশালী বিভিন ব্যক্তিদের অনৈতিক কাজের লোভ দেখিয়ে তাদের পরিকল্পিত স্থানে নিয়ে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজেদের আস্তানায় নিয়ে যাওয়ার পরে চক্রের মূলহোতা ও তার সহযোগীরা ডিবি পুলিশের জ্যাকেট পড়ে ও ওয়াকিটকি সেটসহ হাজির হয়। নিজেকে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগীদের মারধর ও মোবাইলের মাধ্যমে তাদের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করত। এরপর তাদেরকে গ্রেফতার ও মামলাসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করত। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে চারটি মামলার তথ্য পেয়েছে র্যাব।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।