আমেরিকায় ২৪ কোটি টাকার বৃত্তি পেল ‘সিলেটের’ ইউসুফ!

আমেরিকায় ২৪ কোটি টাকার বৃত্তি পেল ‘সিলেটের’ ইউসুফ!
ছবি: সংগৃহীত

সিলেট ব্যুরো।। তার নাম মোহাম্মদ ইউসুফ আহমেদ। বিখ্যাত ক্যামব্রিজসহ যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। কিন্তু আমেরিকার বিখ্যাত ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি) তাকে লুফে নিয়েছে। এমআইটিতে আড়াই লাখ পাউন্ডের (বাংলাদেশি টাকায় ২৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা প্রায়) শিক্ষাবৃত্তি পেয়েছেন ইউসুফ।

মোহাম্মদ ইউসুফ আহমেদের পৈত্রিক বাড়ি সিলেটে। তার বাবা ১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্যে যান। আর মা সেখানে যান ১৯৯৮ সালে। তবে তার বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। মা সাফিয়া বেগম এবং ছোন বোন সাইফ তারিক ও ভাই মাহির আহমেদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের পূর্ব লন্ডনের অলগেইট ইস্টে থাকেন ইউসুফ।

ইউসুফ এমআইটিতে পদার্থবিদ্যা এবং অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করবেন।

জানা গেছে, ইউসুফ আহমেদ পূর্ব লন্ডনের নিউহ্যাম কলেজিয়েট সিক্সথ ফর্ম কলেজে পড়শোনা করেছেন। এই কলেজ থেকে তিনি নির্বাচিত শিক্ষার্থী দলের সঙ্গে গত বছর ইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা সফরে যুক্তরাষ্ট্র যান। সেখানে তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদানে অংশগ্রহণ, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ভালো কলেজে ভর্তির বিষয়াদি সম্পর্কে অবগত হন।

ওই সফরের পূর্বে কলেজের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের আমেরিকার স্যাট পরীক্ষার জন্য দেশটি থেকে বিশেষায়িত শিক্ষক আনা হয়েছিল। স্যাট পরীক্ষায় ইউসুফ চমৎকার ফলাফল করেন। এরপর তার কাছে এমআইটির শিক্ষাবৃত্তির চিঠি আসে। যদিও কয়েক সপ্তাহ পূর্বে আরেক বিশ্ববিখ্যাত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্পাস ক্রিস্টি কলেজ তার ভর্তির আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিল।

এমআইটির পর ইউসুফের কাছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অফারও আসে। তবে এমআইটিকেই বেছে নিয়েছেন ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘‌গত জানুয়ারিতে ক্যামব্রিজ থেকে যখন প্রত্যাখ্যাত হই, তখন আমি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ি। আমার স্বপ্ন ছিল জীবন পরিবর্তন করতে পারে এমন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার।’

‘সত্যি বলতে কি আমি ভাবতে পারিনি যেখানে এখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি ভর্তির সুযোগ পাইনি সেখানে কিভাবে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারব।’

ইউসুফ আরো বলেন, ‘এরপর এমিআইটি থেকে অফার আসে, আসে হার্ভার্ড থেকেও। এটি আমার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে, আমি এখনো বিশ্বাস করতে পারছি না। ইউসুফ আরো বলেন, বিষয়টি আমার এবং আমাদের পরিবারের জন্য লটারি জিতার মতো একটা ব্যাপার হয়ে গেছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে একই কলেজ থেকে আরেক ব্রিটিশ বাংলাদেশি তাফসিয়া সিকদার ভর্তি হয়েছিলেন এমআইটিতে। তাকে দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন ইউসুফ।

তিনি বলেন, ‘যখন আমি জানলাম এই কলেজ থেকেই তাফসিয়া এমআইটিতে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে, আমি ভাবলাম আমি নই কেন?’