কক্সবাজারের পর্যটন : ‘পাইছি ট্যুরিস্ট, কামাইয়া লই!’

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার।। কক্সবাজারে নতুন নতুন পর্যটনস্পট হয়েছে, পর্যটকও বেড়েছে, হোটেল, মোটেল গেস্ট হাউস ও রিসোর্টের সংখ্যাও বেড়েছে। আকাশ ও সড়ক যোগাযোগব্যবস্থারও উন্নতি হয়েছে; একই সঙ্গে বেড়েছে খরচও, কিন্তু বাড়েনি সেবার মান ও অন্য সুযোগ-সুবিধা।
ফলে নিরাপত্তা ও স্বস্তি নিয়ে ঘুরতে অনেক মানুষ এখন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল, ভুটানসহ মালদ্বীপ, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডের দিকেই ছুটছেন।
পর্যটন ব্যবসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাই জানাচ্ছেন, শুধু ভারতেই বাংলাদেশ থেকে বছরে ২০ থেকে ২২ লাখ মানুষ ঘুরতে যান।
অন্যান্য দেশে ঘুরতে গিয়ে থাকা-খাওয়া ও চলাফেরার খরচ তুলনামূলকভাবে কক্সবাজার থেকে কম, সেটিই এখন সত্য।
কক্সবাজারে সরকারি ও বেসরকারিভাবে তেমন কোনো নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা, পরিকল্পনা ও সমন্বয় না থাকার কারণে সৈকতরানী কক্সবাজারের পর্যটনের স্লোগান যেন হয়ে গেছে, ‘পাইছি ট্যুরিস্ট, কামাইয়া লই!’ ফলে এদেশীয় পর্যটক যত বাড়ছে, বাড়ছে না বিদেশি পর্যটক; বরং দেশীয়দেরই বাইরে ঘুরতে যাওয়ার সংখ্যা বাড়ছে।
কাগজ-কলমসর্বস্ব নীতির কারণে পর্যটন হয়ে গেছে এ কক্সবাজারে গলাকাটা। মানে লাভের চেয়ে পরিবেশ, প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিই এখানে বেশি বললে অযৌক্তিক হবে না।
গত এক দশকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের বেড়াতে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এখন সাপ্তাহিক ছুটিতে বা এর সঙ্গে বাড়তি এক-দুই দিনের ছুটি পেলেই পরিবার, বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঘুরতে যেতে মানুষের প্রাণ করে হায় হায়। শহুরে যান্ত্রিক জীবন ও কর্মব্যস্ততায় দুই দণ্ড শান্তি পেতে মানুষ প্রকৃতির পানে ছুটছেন। টানা কয়েক দিনের ছুটিতেও তেমনটি আমরা দেখতে পাই।
বাংলাদেশে এখনো পর্যটকদের প্রথম পছন্দ কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত। এবারের ছুটিতেও কয়েক লাখ পর্যটকের ভিড়ে মুখর ছিল কক্সবাজার। সমুদ্রসৈকতে দাঁড়ানোর ‘তিল ঠাঁই আর নাহি রে’ অবস্থা।
লোনা জল আর নীলের মিতালিতেও আশ্রয় পাততে দেখি বিপুল পর্যটককে। অতিরিক্ত পর্যটকের ভিড়ের কারণে বাড়তি হোটেলভাড়া, হোটেলে জায়গা না পেয়ে রাস্তায় অবস্থান, খাবারের আকাশচুম্বী দাম, খাবারের সংকট, স্থানীয় যানবাহনে ভোগান্তি ও বিড়ম্বনা—সবকিছুই এবারও ছিল বরাবরের মতো।