কক্সবাজার জেলা আ.লীগের সম্মেলন: বহাল পূর্বের কমিটি, সভাপতি-ফরিদ, সম্পাদক-মুজিব'

শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার, ১৩ ডিসেম্বর।। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলেও আগের কমিটির ওপর আস্থা রেখেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) জেলার শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সম্মেলনে আগের কমিটি বহালের ঘোষণা দেন কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ এমপি।
তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র এদের ওপর বিশ্বাস রেখেছে। তাই এই কমিটি বহাল রাখা হল। দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটির ঘোষণা করা হবে।’
আগের কমিটিতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী। তাকে সভাপতি করা হয়েছে। আর মুজিবুর রহমানকে পুনরায় সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।
মঙ্গলবার সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনসহ জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। বেলুন উড়িয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপি যে হাত দিয়ে আক্রমণ করবে, তা ভেঙে দিতে হবে। এটা শেখ হাসিনার নির্দেশ। বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত করতে শেখ হাসিনার এ নির্দেশ মেনে চলতে হবে।’
মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আওয়ামী লীগে বসন্তের কোকিলের প্রয়োজন নেই। দলের নামে কেউ অপকর্ম করবেন না। মনে রাখবেন, সাধারণ মানুষ ভয়ে আপনাদের কিছু বলে না। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আমাদের মহাথির, আমাদের মহাবীর। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট যার শরীর ক্ষত হয়েছিল ঘাতকের বুলেটে। জাতি সেই কলঙ্কের কথা ভোলেনি।’
তিনি বলেন, ’৭৫-এর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন জিয়াউর রহমান। সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হবে না আইন করে এই মাস্টারমাইন্ডের পরিচয় দিয়েছেন জিয়া। ভাগ্যক্রমে সেদিন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে যান। তাদেরকে হত্যা করার জন্য ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলা হয়েছে। যেটির মাস্টারমাইন্ড তারেক জিয়া। সেই বিএনপির মুখে বড় বড় কথা শোভা পায় না।’
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
এরপর কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক ও বাইবেল পাঠের পর উদ্বোধনী বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ স্বাধীনতার সুস্পষ্ট ঘোষণা। এরপর বাঙালি ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধারা একে একে মারা যাচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশ আছে, থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। একমাত্র শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে এটা সম্ভব হয়েছে। দেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা যত দিন সুস্থ থাকবেন তত দিন তিনি জনগণের ভালোবাসা নিয়ে দেশকে এগিয়ে নেবেন। এটা আস্থা রাখা যায়। দেশের মানুষের আস্থা আছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে শেখ হাসিনা আবার ক্ষমতা গ্রহণ করবেন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।’
প্রধান বক্তা জাতীয় সংসদের হুইপ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকের বাংলাদেশ সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সঠিক পথে এগোতে থাকবে দেশ। এজন্য দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ।’
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলন সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ও দপ্তর সম্পাদক এমএ মঞ্জুর।