তিস্তার চর থেকেই উঠবে ৩০ কোটি টাকার ফসল

তৌহিদুল ইসলাম, নিউজ করেসপনডেন্ট।। যে তিস্তা নদী বছরে কয়েকবার রূপ বদলায় সেই তিস্তার বুকে বালুর দেশে এখন বিভিন্ন ফসলের সমারোহ। লালমনিরহাটের তিস্তার চরজুড়ে শুধু ফসল আর ফসল। মিষ্টি কুমড়া, পেঁয়াজ, রসুন, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের চাষাবাদ হচ্ছে তিস্তার বিস্তীর্ণ চরে। এসব ফসলের কাঙ্খিত বাজার মূল্য থাকলে ভালো দাম পাবেন বলে আশাবাদী চরাঞ্চলের কৃষকরা।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর তিস্তার বুকে অনেকটা বেশি অংশজুড়ে চর পড়েছে। যে কারণে চরাঞ্চলের কিছু কৃষক সেই চরের পলি পড়া জমিকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ফসল চাষ করছেন। আর হয়েছেও বাম্পার ফলন। তাই হাসি ফুটেছে তিস্তার কৃষকের ঘরে ঘরে। বন্যা মৌসুমে তিস্তা চরাঞ্চলবাসীর আহাজারি, আর শুকনো মৌসুমে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ফসলের সমারোহ বলে দেয় তিস্তার রূপরেখা। কৃষকরা বলছেন, তিস্তা এখন চর নয়, চর এখন গ্রামে পরিণত হয়েছে।
এ বছর তিস্তায় ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি চরে পরিণত হয়েছে। যার মধ্যে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে ফসলের চাষাবাদ হয়েছে। যা গত বছরের থেকে ৫শ’ হেক্টর জমিতে বেশি চাষাবাদ হয়েছে। এসব ফসলের কাঙ্খিত বাজার মূল্য ভালো থাকলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবে বলে কৃষি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর তিস্তার চর থেকে কৃষকের ঘরে ফসলের বাজারমূল্য ও অর্থের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৯২ কোটি ১৫ লাখ ৫৬ হাজার ১৩৭ টাকা। তবে এসব সবজি চাষে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। সার, ডিজেল, আর কীটনাশকের দাম বৃদ্ধিতে নাভিশ্বাস উঠেছে কৃষকদের মধ্যে। কৃষকরা বলছেন, কৃষি বিভাগের সহায়তা পেলে এসব চরে আরো ভালো ফসল ফলানো সম্ভব।
তিস্তা চরের কৃষক সহিদার রহমান বলেন, এ বছর তিস্তা নদীতে চর বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক মিষ্টি কুমড়া, পেঁয়াজ, রসুন, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করেছেন। আর এসব কৃষি পণ্যের ফলনও ভালো হয়েছে। যদি বাজার দাম ভালো পাই তাহলে দুটো টাকার মুখ দেখতে পারবো।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক হামিদুর রহমান জানান, গত বছরের তুলনায় তিস্তার চরে এ বছর বেশি চাষাবাদ হয়েছে। ফসলও অনেকটা ভালো হয়েছে। কৃষি বিভাগ থেকে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক তদারকি করেছেন। আমরা আশাবাদী কৃষকরা লাভবান হবে।
তিনি আরো বলেন, এসব এলাকার চাষিদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে তাদের প্রণোদনার আওতায় আনা হচ্ছে। তিস্তার চরজুড়ে ব্যাপকহারে ফসল আবাদ হচ্ছে। কৃষকরা যেভাবে ফসলের পরিচর্যা করছে তাতে এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন হবে।