নেই ভবন, খাতা-কলমে শিক্ষার্থী দেখিয়ে হাতিয়ে নেন পাঠ্যবই

জীবন হক, ঠাকুরগাঁও। প্রতিনিধি: কয়েকটি সিমেন্টের পিলারের উপরে দাড়িয়ে রয়েছে জরাজীর্ণ টীনের চালা। রাস্তা থেকে সেটির কাছে যেতে হলে পার হতে হবে কয়েকটি কবর। আর চারদিকে বিস্তৃত আবাদি জমি। এভাবেই চলে আসছে দীর্ঘ বিশ বছরের অধিক সময় ধরে।
দেখে কোন খড়ি রাখার ঘর মনে হলেও খাতা-কলমে সেটি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বৃহস্পতিবা সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বেংরোল ফুটানিবাজার বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমনি চিত্র। নেই বিদ্যালয়টির কোন সাইনবোর্ড ও ভবন। শুধু দেখা মিলে দশটি খুটির উপর দাড়িয়ে থাকা টিনের চালা। তবে বাস্তবতায় বিদ্যালয়ের অস্তিত্ব না থাকলেও প্রতিবছরে খাতা-কলমে চলমান শিক্ষাক্রম দেখিয়ে হাতিয়ে নেন পাঠ্যবই। বিদ্যালয়টির এমন অবস্থাতেও পাঠ্যপুস্তক দেওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয় ও সচেতন মহল। বিদ্যালয়টির পাওয়া নতুন পাঠ্যবই বিক্রিরও অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বেংরোল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাকিম বলেন, আমরা এবারে সব শ্রেণির ৫০ সেট বই পেয়েছি।
সেগুলো আমাদের একজন শিক্ষকের বাসায় রেখেছি। আমরা অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছি অনুমোদনের জন্য কিন্তু পাচ্ছি না। শিক্ষা অফিসের সকল নির্দেশনা আমরা মেনে চলার চেষ্টা করি। নতুন পাঠ্যবই গুলো কি হয় এ প্রশ্নের জবাবে কোন সদ উত্তর না দিতে পেরে তিনি বলেন, সেগুলো আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মাঝে দিয়ে দেই। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মতিন বলেন, ২০০০ সালের দিকে আমরা সে প্রতিষ্ঠানটির কাজ শুরু করি। তারপর থেকে চেষ্টা চালিয়ে আসছি সরকারি করন করার জন্য। আশা রাখছি সামনে এটি সরকারি হবে। আর বইগুলো এলাকার যে কোন শিক্ষার্থী চাইলে আমরা দেই তাদের পড়াশোনা করার জন্য।
অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের সরকারি হওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মনসুর আহমেদ বলেন, বিষয়টি অবগত হলাম। তাদের কোন শিক্ষার্থী না থাকা সত্বেও কিভাবে তারা বই পেল সেটি তদন্ত করা হবে। সেই সাথে তারা বই বিক্রি করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে নিয়ম মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।