নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা।।সেনাবাহিনী,পুলিশ ও সাংবাদিক পরিচয় থেকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেয়ার নাম করে অর্থ আত্মসাৎতের অভিযোগে মো. সিরাজুল ইসলাম (৫৮) নামের এক প্রতারককে গ্রেফতার করছে র্যাব-১।
উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর থেকে মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) ভোর সাড়ে ৩টায় ওই প্রতারককে গ্রেফতারের পর র্যাব-১ কার্যালয়ে বিকেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন অধিনায়ক লে. কর্ণেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন।
গ্রেফতার হওয়া ওই প্রতারক হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার মৃত এনামুল হকের ছেলে সিরাজুল ইসলাম। গ্রেফতারকালে তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি ওয়াকিটকি, চারটি আইডি কার্ড (সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সাংবাদিকের) ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, 'রাজধানীসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোষাক, সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে।
এমন তথ্যের ভিত্তিতে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের ১৩ নম্বর সড়ক থেকে ওই প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার হওয়া ওই প্রতারক সমাজের অশিক্ষিত ও অশিক্ষিত সাধারণ মানুষদের টার্গেট করে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিত।
তিনি বলেন, গ্রেফতার হওয়া এই প্রতারক সামরিক, বেসামরিক বাহিনী এবং সাংবাদিকের নাম পরিচয় ব্যবহার করে চাকরির তদবির বাণিজ্য করে আসছিল। সেই সঙ্গে কখনো কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বয়স নকল করে এবং তাদের নাম্বার ক্লোন করে বিভিন্ন কর্মকর্তাকে ফোন করে তদবির বাণিজ্য করত।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে অধিনায় আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, সে কখনো ভুয়া পুলিশ, কখনো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, আবার কখনো সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ মানুষের সঙ্গে প্রতারণাণা মূলক অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। এমনকি তার ফোন কল লিস্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশের বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিদের ব্যবহৃত ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে কল দিয়ে সে প্রতারণা করে আসছিল।'
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, 'প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে সে পাঁচ সাত বছর ধরে এমন প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল সিরাজুল। তবে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর হাতে এই প্রথম গ্রেফতার হয়েছে। এমন প্রতারণা করে সে লাখ লাখ টাকার মালিক হয়েছে। তার সম্পর্কে তদন্ত চলছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
প্রতারকের উত্থান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, গ্রেফতার হয় প্রতারক পেশায় একজন ব্যবসায়ী। সেই সুবাদে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর র্যাংক ব্যাচ সম্পর্কে তার ধারণা ছিল। এই সুযোগ কি কাজে লাগিয়ে নিজস্ব মেধা খাটিয়ে চাকরির তদবির বাণিজ্যের প্রতারণা চালিয়ে আসছিল সে। প্রতারণার কাজে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআইয়ের পরিচয় ব্যবহার করতেও ইতস্ততাবোধ করত না সিরাজুল।
এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানিয়েছে র্যাব।