ব্যাংক কর্মকর্তা রনজিত পাল হত্যা মামলায় ১ জনের মৃত্যুদন্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

সিলেট অফিস।। মৌলভীবাজারের ব্যাংক কর্মকর্তা রনজিত পাল হত্যা মামলায় এক আসামির মৃত্যুদন্ড ও চারজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ শাহাদাৎ হোসেন প্রামানিক এ রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত রিপন পাল মৌলভীবাজার সদর উপজেলার মনোহর কোনা গ্রামের মৃত রবীন্দ্র কুমার পাল ওরফে রবি পালের ছেলে।
এছাড়া যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, একই গ্রামের যোগেন্দ্র পালের ছেলে বিমল পাল, মৃত রবীন্দ্র কুমার পাল এর ছেলে উত্তম পাল, এতো অনিল চন্দ্র পালের ছেলে আশীষ পাল, মৃত তারণ পালের ছেলে চিত্তরঞ্জন পাল ওরফে চিত্ত পাল। পাশাপাশি দন্ডিতদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি ব্যতিরেকে অর্থদন্ড অনাদায়ীদের আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ৩০ জুন রাত ৯ টার দিকে মৌলভীবাজারের শমশেরনগর সড়কে চট্টগ্রাম স্যানেটারি দোকানের সামনে আসামিরা ব্যাংকার প্রণজিত পালকে জোরপূর্বক রিকশা থেকে নামায়। ওই সময় আসামি রিপন পাল ধারালো অস্ত্রো ডেগার দ্বারা রনজিত পালের বাম উরুতে আঘাত করে গুরুতর যখম করে। সেসময় আসামি বিমর পাল, উত্তম পাল, চিত্ত পাল ও আশীষ পাল ভিকটিমকে ধরে রাখেন।
পরবর্তীতে আশপাশের লোকজন গুরুতর অবস্থায় প্রনজিত পালকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী একই গ্রামের বাসিন্দা কাঞ্চন রানী পাল বাদী হয়ে মৌলভীবাজার সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক স.ম কামাল হোসেন উল্লেখিত পাঁচ আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
২০১৭ সালের আগস্টের ৩ তারিখে মামলাটি সিলেটের দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়। ২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারকার্য শুরু হয়।
দীর্ঘ শুনানিতে ৩৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বিচারক ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্তক্রমে রিপন পালকে ৩০২ ধারায় মৃত্যুদন্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তার সহোদর উত্তম পালসহ চার আসামীকে একই ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমান, অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরওয়ার আহমদ চৌধুরী আদালতের এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
আসামির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এমাদুল্লাহ শহিদুল ইসলাম। তিনি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।