নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা।। অনলাইনে পর্ন ভিডিও প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারকারী চক্রের মূলহোতাসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। চক্রটির তিন মাসে প্রায় ৩০ কোটি টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, চক্রের মূলহোতা আবু মুসা ইমরান আহমেদ সানি, মো. আবু শামা, ফাতেমা আক্তার, শায়লা আক্তার, শাহ আরমান ও মো. সেলিম।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ১১টি মোবাইল ফোন, ১৭টি সিম কার্ড, ২টি ল্যাপটপ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই, ডেভিট ও ক্রেডিট কার্ড উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা, সিলেট, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে সিটিটিসির সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সিটিটিসি প্রধান মো. আসাদুজ্জামান।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অপরাধ প্রবণতা নিরসনে সরকার ও পুলিশ অত্যন্ত কঠোর। অপরাধ প্রবণতা নিরসনে কাউন্টার টেরোরিজমের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ নিয়মিত তদারকি করে একটি আন্তর্জাতিক ভিডিও লাইভ প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারে।
পরে ব্যাপক অনুসন্ধান ও অনলাইন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশে ওই অনলাইন মোবাইল আ্যপ্লিকেশন সাইটটির মূলহোতা আবু মুসা ইমরান আহমেদ সানি ও তার সহযোগীদের শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতার আবু মুসা ইমরান আহমেদ সানি সারাদেশে ১২০ জনের বেশি এজেন্টের মাধ্যমে ২০২০ সাল থেকে ভিডিও লাইভ স্ট্রিমিং সাইটটি চালাচ্ছে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যে তাদের ৩০ জনের বেশি এজেন্ট রয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, আবু মুসা ইমরান আহমেদ সানি ও তার সহযোগীদের সহায়তায় বাংলাদেশে অননুমোদিত ভার্চুয়াল ডায়মন্ড ও ভার্চুয়াল গেম কয়েন ব্যবহার করে অবৈধ ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। গ্রেফতার সানির ব্যাংক ও মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস আ্যকাউন্ট স্টেটমেন্ট পর্যালোচনায় গত তিন মাসে প্রায় ৩০ কোটি টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়। অবৈধ ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে উপার্জিত টাকা তারা হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে পাচার করতো।
সানি ও তার সহযোগীরা পরস্পর যোগসাজসে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে লাইভ পর্ন ভিডিও সাইট পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে অবৈধভাবে পাচার করার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আ ফ ম আল কিবরিয়া, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. নাজমুল ইসলাম ও অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মো. আহসান হাবীবের সার্বিক নির্দেশনায় কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আরিফুল হোসেইন তুহিনের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।