ভারতীয় নাগরিকসহ স্বর্ণ চোরাচালানকারী ১২ সদস্য গ্রেফতার

ভারতীয় নাগরিকসহ স্বর্ণ চোরাচালানকারী ১২ সদস্য গ্রেফতার
ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা।। দর্শনাগামী বাস হতে ৫ কোটি টাকা মুল্যের প্রায় ৬৩৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার ও ৩ ভারতীয় নাগরিক সহ ১২ জন আটক করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা।
গতকাল রাতে  কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে ঢাকার মাজার রোড (গাবতলী) হতে বাবুবাজার ব্রীজ হয়ে দর্শনাগামী পূর্বাশা পরিবহন ও রয়েল পরিবহনদুটি এসি বাসযোগে ও যাত্রীদের মাধ্যমে স্বর্ণ চোরাচালান হতে পারে। 
 
পাসপোর্ট অনুসারে আটককৃত যাত্রীরা হলেন, রাহাত খান (৩৩), মোহসিন আল মাহমুদ (২৯), কাজী মামুন(৩৪),  সৈয়দ
আমীর হোসেন(৩৪), শামীম (২৩), মামুন (৩৭), বশির আহমেদ কামাল (৩৭), মামুন সরকার (৩৭), আতিকুর রহমান মীনা (৪২) এবং ভারতীয় ৩ জন নাগরিক নবী হুসাইন(৪৬), শাহাজাদা (৪৭) ও মোহাম্মদ ইমরান (৩৭)। এসময় তাদের কাছ থেকে ৭ হাজার চারশত বত্রিশ গ্রাম বা
৬৩৭.১৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
শনিবার ২৬ নভেম্বর রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন  কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক সানজিদা খানম।
তিনি জানান, বাস দুটি চুলকুটিয়া, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ, ঢাকায় থামিয়ে তল্লাশীর
লক্ষ্যে শুক্রবার  রাত ১১টায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের গোয়েন্দা টীম উক্ত পূর্বাশা পরিবহন ও রয়েল পরিবহন বাসের সম্ভাব্য গমন চুলকুটিয়া, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ,ঢাকার ঝিলমিল হাসপাতাল (প্রাঃ) লিঃ এর সম্মুখে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার পুলিশের সহায়তায় সতর্কমূলক অবস্থান গ্রহণ করে। 
সতর্ক অস্থানকালে আজ রাত ৩ টায় পূর্বাশা পরিবহন ও রয়েল পরিবহনের এসি বাস দুইটি  গোয়েন্দা টিমের নজরে আসে। 
গাড়ি দুইটির বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তাৎক্ষনিক উপস্থিত পুলিশ টিমের সহযোগিতায় গোয়েন্দা দলটি দুইভাগে বিভক্ত হয়ে বাস দুটির ভিতরে উঠে বিভিন্ন স্থান ও যাত্রীদের তল্লাশী করে। 
প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন যাত্রীদের
জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তাদের নিকট স্বর্ণবার থাকার কথা অস্বীকার করেন।
পরবর্তীতে সন্দেহভাজন যাত্রীদের শরীরের অভ্যন্তরে লুকায়িত অবস্থায় স্বর্ণ আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী ঝিলমিল হাসপাতাল (প্রাঃ) লিঃ এ নিয়ে এক্সরে পরীক্ষণ সম্পন্ন করা হয়। 
পরীক্ষণ সম্পন্ন করে মোট ১২ জন যাত্রীর মধ্যে ৫ জনের রেক্টাম এবং ৭  জনের লাগেজের হ্যান্ডলবার, মানি ব্যাগ, কাঁধ ব্যাগ এর বিভিন্ন অংশে বিশেষভাবে লুকায়িত অবস্থায় মোট ৭৪৩২ (সাত হাজার চারশত বত্রিশ) গ্রাম বা
৬৩৭.১৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য,তাদের নিকট এসব স্বর্ণ বার আমদানি বা ক্রয়ের স্বপক্ষে বৈধ কোন দলিলাদি পাওয়া যায়নি। 
উল্লিখিত সকল স্বর্ণ উদ্ধার কার্যক্রম দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের সম্মুখে সম্পন্ন করা হয়। 
জব্দকৃত আলামত ও আটককৃত আসামীদেরকে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় আটককৃত স্বর্ণবারসহ কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, সদর দপ্তর, ঢাকায় নিয়ে আসা
হয়। 
উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা মাত্র।
উপ-পরিচালক সানজিদা খানম জানান   প্রাথমিক অনুসন্ধানে এবং প্রেক্ষাপট
বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয় যে, আটককৃত স্বর্ণবারগুলি চোরালানের জন্য ঢাকা হতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ও আসামীগণ এ কাজে সরাসরি জড়িত স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের সদস্য এই আসামীগণকে জিজ্ঞাসাবাদ করে চোরাচালান প্রতিরোধের প্রত্যয়ে তাদের চক্রের অন্যান্য
সদস্যকে আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে তৎপরতা চালানো হবে।
উক্ত আটকের বিষয়ে The Customs Act, 1969 অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং একই সাথে আটককৃত আসামীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।