যাত্রীবেশে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্র গ্রেফতার

যাত্রীবেশে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাইকারী চক্র গ্রেফতার
ছবি: সংগৃহীত
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।।রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকায় চলাচল করা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালকদের টার্গেট করত একটি চক্র। এরপর নিরিবিলি গন্তব্যের উদ্দেশ্য যাওয়ার জন্য অটোরিকশা ভাড়া করে নিয়ে যাওয়া হতো। পূর্বপরিকল্পিত স্থানে নিয়ে গলা কেটে অটোরিকশা চালককে হত্যা করে ছিনিয়ে নেওয়া হতো। এরপর চালকের মরদেহ নিরিবিলি এলাকায় ফেলে পালিয়ে যেতো চক্রটি।
গত ডিসেম্বরে পরপর একই কায়দায় দক্ষিণখান এলাকার দুই অটোরিকশা চালককে হত্যার পরে গাড়ি ছিনতাই করে চক্রটি। ভুক্তভোগী পরিবারের দায়ের করা মামলার ছায়া তদন্তে নেমে ভয়ংকর এই চক্রের সন্ধান পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তরা বিভাগ। 
গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, চক্রে ৬ জন সদস্য। তাদের মধ্যে ৩ জন চালকদের হত্যা করে রিকশা এনে দিত। এরপর চক্রের অপর সদস্যরা অটোরিকশা বিক্রি করত।
চালক হত্যায় জড়িতদের রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ও মৌলভীবাজারে অভিযান চালিয়ে চক্রের ৬ জনকে গ্রেফতার  করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মো. খালেদ খান শুভ (২০),  মো. টিপু (৩১), মো. হাসানুল ইসলাম ওরফে সান (২০), মো. জাহাঙ্গীর হোসেন (৪০), আব্দুল মজিদ (২৯) ও মো. সুমন (৩৫)।
 এ সময় হত্যা ব্যবহৃত চাকু ও পাথর উদ্ধার করা হয়। এছাড়া নিহত মোস্তফার (৩৫)'র ছিনতাই হওয়া মোবাইলে ও অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়।
শনিবার ১৪ জানুয়ারি  দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এ তথ্য জানান ডিএমপির গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ। 
তিনি জানান, একটি ভয়ংকর অটোরিকশা ছিনতাই চক্র দীর্ঘদিন ধরে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে আসছিল। গত ডিসেম্বর মাসে পরপর দুই চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার  করা হয়।
গত ডিসেম্বর মাসের ৮ ও ২৫ তারিখ একই কায়দায় অটোরিকশা চালক মো. মোস্তফা (৩৫) ও  জিহাদ (১৫) নামের দুই চালকের রিকশায় ভাড়া করেন মো. টিপু, হাসান ও শুভ।
পরবর্তীতে মোস্তফাকে আশিয়ান সিটি ও জিহাদকে পূর্বাচল এলাকায় নিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যা শেষে একইভাবে দুজনের মরদেহ নির্জন এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়।
ডিবির সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা নিহত মোস্তফার বৃদ্ধা মা সামছুন্নাহার বলেন, গত ৭ ডিসেম্বর  রাত ১১টায় আমি আমার ছেলেকে ফোন দেই তখন সে ফোন ধরে না। রাত দেড়টায় আমাকে ফোন দিয়ে বলে আম্মা কেনো ফোন দিয়েছিলা তখন আমি বলি বাবা আমার কিছু টাকা লাগবে আমার ছেলে বলে আম্মা তুমি জান না বৃহস্পতিবার আমার কিস্তি পরিশোধ করার তারিখ। ফোন রাখার আগে আমাকে বলে সকালে বাসায় আসব। আমার মানিক রতন আর আসেনি এইটাই ছিল আমার ছেলের সঙ্গে আমার শেষ কথা। এর পর থেকে ১০দিন আমার ছেলেকে আমি খোঁজে পায়নি। নিখোঁজ হওয়ার ১১দিনে মাথায় ফোন আসে আমার মেয়ের জামাই কাছে আশিয়ান সিটি নামে একটি জায়গায় আমার ছেলের লাশ পায়।
আমি এখন কার কাছে যাবো আহাজারি করে তিনি আরও বলেন, আমার ছেলের  বউসহ আমার তিন নাতি-নাতনী আছে তারা ছোট ছোট  তাদেরকে নিয়ে আমি এখন কোথায় যাব। আমার ছেলেই আমার সংসার চালাতো। আমার কেউ রইলো না।
 
যেদিন হারিয়ে গেছে আমি বোড বাজার থেকে আসলাম এভাবে প্রায় ১০ দিন খোঁজার পরে আমি আবার চলে গেছি বোর্ড বাজার আমার ছেলের বউ অসুস্থ ছিল। হসপিটালে ছিলাম রাতে। ১১দিকর মাথায় ফোন আসে আশিয়ান সিটি থেকে আমাদের লাশ শনাক্ত করি মমিংসহ গফরগাঁ আমাদের গ্রামের বাড়িতে মাটি দেন। ১৬ তারিখে আমরা হাতে বুঝে পায়