তারাবানুর বয়স ১০৭। স্বামী মারা গিয়েছেন । তিনি নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামের বাসিন্দা। পরিবারে এখনো রয়েছে পাঁচ সন্তান। দু্ মেয়ে ও তিন ছেলে। শেষ বয়স পার করছিলেন ছেলেদের সাথে।
স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন ছেলেকে লিখে দিয়েছেন সমস্ত জমি। দুই মেয়েকেও বিয়ে দিয়েছেন। পারিবারিক সিদ্ধান্ত হয়েছিল তিন ছেলে প্রত্যেকেই একমাস করে মাকে খাওয়াবে। ছোট ছেলের কাছে এক মাস রাখার পর আর বড় ছেলে কথা মত তাকে নিয়ে যায়নি।
তাই ছোট ছেলে দুই দিন পার হওয়ার পর বিরক্ত হয়ে রাতের আঁধারে ওই বৃদ্ধ মাকে ফেলে আসে অন্ধকার রাস্তায়।
বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তারা আপাতত সমাধান করলেও হয়নি স্থায়ী সমাধান। ওই মা-এখন সকলের, কাছেই হয়েছেন বোঝা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাস্তায় মাকে ফেলে যায় ছোট ছেলে আজাদ। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি মধ্যরাত অবধি বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেন।
কিন্তু বড় ছেলে মানিক, মেঝ ছেলে হানিফ বা ছোট ছেলে আজাদ কেউই ওই বৃদ্ধকে খাওয়াতে রাজি হয়নি। উপায় না পেয়ে বড় ছেলের ঘরের নাতির কাছে ১৫ দিন খাওয়াতে আহ্বান করে গভীর রাতে বাসায় ফিরেছেন তিনি।
তিনি আরও জানান, স্বামী মারা যাওয়ার পর দুই বিঘা সম্পত্তি ওই তিন ছেলেদের রেজিস্ট্রি করে দিয়েছেন ওই বৃদ্ধা। এখন ওই বৃদ্ধাই সকলের কাছে যেন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউপি চেয়ারম্যান তোফাজ্জ্বল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েও কোন সমাধান করতে পারেননি।
পুরো ইউনিয়নের মধ্যে ওই তিন ভাইয়ের আচারণ সবচেয়ে রুক্ষ। ওই বৃদ্ধার জন্য সুষ্ঠু একটি ব্যবস্থার জন্য প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সদর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। অভিযোগ পেলে তার ছেলেদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।