সিলেটে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে বাড়ছে উত্তাপ, বাড়ছে সংঘাতও

সিলেট প্রতিনিধি।। এনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে হঠাৎ করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে সিলেটের রাজনীতি। সমাবেশ সফলে সিলেটজুড়ে ব্যাপক প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছে দলটি। গত কয়েকদিনে প্রচার কার্যক্রম চলাকালে একাধিক স্থানে হামলা ও সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। সরকারদলীয় ও পুলিশের বিরুদ্ধে এসব হামলার অভিযোগ তুলেছে বিএনপি। এছাড়া গ্রেপ্তারও হয়েছেন বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী।
বিএনপি নেতাদের শঙ্কা সমাবেশের আগে গণগ্রেপ্তার চালাতে পারে পুলিশ। একারণে নেতাদের অনেকে রাতে বাসায় থাকছেন না বলেও জানিয়েছেন তারা। এছাড়া আরও হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলেও শঙ্কা তাদের। সবমিলিয়ে সমাবেশ যত ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে উত্তাপ। অপ্রীতিকর ঘটনার শঙ্কা করছে পুলিশও। তাই শুক্রবার থেকে সিলেটে শুরু হতে যাওয়া দুদিন ব্যাপী ইজতেমা পিছিয়ে নিতে বলেছে মহানগর পুলিশ। বিএনপির সমাবেশের পর ইজতেমা আয়োজন করে মঙ্গলবার আয়োজকদের অনুরোধ করে পুলিশ। তবে আয়োজকরা তা না শুনে বুধবার থেকেই ইজতেমা শুরু করেন। বুধবার সন্ধ্যায় হবিগঞ্জের লাখাইয়ে পুলিশ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৮ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরআগে মঙ্গলবার মধ্যরাতে সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে উপজেলা বিএনপির বৈঠক চলাকালে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহির খানকে আটক করে পুলিশ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। মঙ্গলবার বিকেলেই ওসমানীনগরে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্ঠা তাহসিনা রুশদীর লুনার গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ করা হয়। লুনা নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী। তার অভিযোগ, গণসমাবেশের প্রচারপত্র বিলিকালে পুলিশের উপস্থিতিতে যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে তার গাড়ি ভাংচুর করে। এসময় পুলিশ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য ফয়সল আহমদ মিলন ও উমরপুর ইউনিয়ন বিএনপির নেতা নুরুল ইসলামকে আটক করে বলেও জানান লুনা।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আহমদ আম্বিয়া পাল্টা অভিযোগ করেন, যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কর্মসূচী চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীরাই তাদের উপর হামলা চালায়। একই দিনে, সিলেটের বিয়ানী বাজারেও বিএনপি প্রচার মিছিল চলাকালে ধাওয়া করে ছাত্রলীগ। বিয়ানীবাজারের দক্ষিণবাজারে সমাবেশ সফলের আহ্বানে ছাত্রদল মিছিল বের করলে তাদের ধাওয়া করা হয়। ধাওয়া খেয়ে ছাত্রদল ও বিএনপি নেতারা অন্যত্র সরে যান। ধাওয়ার বিষয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য কাওছার আহমদ বলেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উস্কানিমুলক শ্লোগান দিয়ে এখানকার পরিস্থিতি অশান্ত করার চেষ্টা করেছিলো। ছাত্রলীগ সেটি প্রতিহত করেছে।
এরআগে গত সোমবার সিলেটের কানাইঘাটে, রোববার গোলাপগঞ্জে এবং মৌলভীবাজারে প্রচারপত্র বিলিকালে পুলিশ বাধা প্রদান করে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। সিলেট জেলা বিএনপির সভপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার দেখে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তাই সমাবেশের দিন যত ঘনিয়ে আসছে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ততই বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা আমাদের প্রচার কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছে। হামলা চালাচ্ছে। তবে কোন বাধাই ১৯ নভেম্বর সিলেটে সমাবেশ ঠেকাতে পারবে না।