সৈয়দপুরে স্কুল শিক্ষার্থীর দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার

সৈয়দপুরে স্কুল শিক্ষার্থীর দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার
ছবি সংগৃহিত

স্টাফ রিপোর্টার।। নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেললাইন থেকে এক স্কুল শিক্ষার্থীর দ্বিখণ্ডিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। উপজেলার ওয়াপদা মোড় হাইওয়ে রেলওয়ে লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত শিক্ষার্থী শ্রী শান্ত রায় (১৪) বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের সোনাখুলি গ্রামের শ্রী সাগর রায়ের ছেলে এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী। এই ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিয়ে রহস্য দেখা দিয়েছে। একারণে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

রেলওয়ে পুলিশ জানায়, নিহত শান্ত রায় রবিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সৈয়দপুর থেকে তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনটি চিলাহাটির দিকে রওনা হয়। ওয়াপদা মোড় লেভেল ক্রসিংয়ের সামনে ট্রেনটি আসলে ছেলেটি অসাবধানতাবশত ট্রেনের নিচে পড়ে দ্বিখণ্ডিত হয়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, শান্ত রায় এবার নির্বাচনী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করে। সে ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। আজ রোববার সকালে সে স্কুলে আসার উদ্দ্যেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে আসে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সে উল্লেখিত এলাকায় রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটছিল। এ সময় রাজশাহী থেকে চিলাহাটিগামী আন্তঃনগর তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেন কাছাকাছি আসলে রেললাইনে ঝাঁপ দেয় সে। এতে ট্রেনে কাটা পড়ে তার দেহ দুই টুকরা হয়ে যায়।

নিহতের বাবা সাগর রায় বলেন, অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিকভাবেই সে স্কুলে আসে। বাড়িতে তার আত্মহত্যা করার মতো কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

সৈয়দপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজমুল হুদা জানান, শান্ত রায় অত্যন্ত মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। তার নামের মতোই সে শান্ত প্রকৃতির ছেলে। আজও স্কুলে সে এসেছিল। তাকে দেখে স্বাভাবিকই মনে হয়েছে। কিন্তু সে কি কারণে আত্মহত্যা করল তা আমার জানা নেই।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী অনেকে জানান, লাশের গলায় রশি দিয়ে শক্ত করে বাধার মত রক্তাক্ত দাগ রয়েছে। একারণে ধারণা করা হচ্ছে আত্মহত্যা নয় বরং হত্যা করে রেললাইনে ফেলে রাখার ঘটনাও হতে পারে। প্রেম ঘটিত বা কিশোর গ্যাংয়ের আক্রোশ জনিত কিনা তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। এজন্য তদন্তের দাবী উটেছে। 

সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাকিউল আযম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। সেখেনে নিহতের প্যান্টের পকেটে রাখা মুঠোফোনের কভারের ভিতরে থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করি। তাতে মোবাইল নাম্বারসহ লেখা রয়েছে 'কেউ আমার লাশ পাইলে ফোন দিয়েন বাসায়'। আমি নিজে স্কুলে গিয়ে তার পরীক্ষার খাতার সাথে চিরকুটের লেখা মিলিয়ে দেখেছি। আমার মনে হয়েছে এটি তার হাতেই লেখা। তিনি আরও বলেন, আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরিবারের কেউ অভিযোগ করেননি। তবে রেলওয়ে থানায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে।