হাতের আঙুলের অস্ত্রোপচারে শিশুর মৃত্যু, দায় নিচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ

এস এম আওলাদ হোসেন, সিনিয়র রিপোর্টার।। বাবার সঙ্গে কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছিল ছোট্ট শিশু মাইশা। কথা ছিল আঙুলের অপারেশন হবে। অথচ আঙুল নয় অপারেশন করা হয় পেটে। সেই তথ্যও গোপন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শিশুটির মৃত্যুর পর মরদেহ বাড়িতে নেয়া হলে পেটে মেলে ২০টি সেলাই।
বুধবার (৩০শে নভেম্বর) রাজধানীর রূপনগরের আলম মেমোরিয়াল হাসপাতালে সন্তানকে অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার ঘণ্টা-খানেক পর শিশুটির বাবার কাছ থেকে বন্ড সই নেয় কর্তৃপক্ষ। বিকেল ৫টায় জ্ঞান ফেরার কথা বলা হলেও দুপুর ১২টায় নেয়া হয় আইসিইউতে। শিশুটির নাম মারুফা জাহান মাইশা (৫)। কুড়িগ্রাম পৌর শহরের ৬নং ওয়ার্ডের ভেলাকোপা ব্যাপারী পাড়া গ্রামের মোজাফফর আলী ও বেলি আক্তার দম্পতির মেয়ে।
মাইশার বাবা মোজাফফর আলী বলেন, সকালে ডাক্তার এসে চেকাপ করে বলে আমাদের মেয়ে মারা গেছে, কিছুক্ষণ পর অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে এসে আমাদের টাকা ফেরত দিয়ে বলে এখানেই গোসল করিয়ে নিয়ে যান।
এর কিছুক্ষণ পর ওই হাসপাতাল থেকে নেয়া হয় মিরপুরের গ্লোবাল স্পেশালাইজড হাসপাতালে। ঘণ্টা খানেক পর জানানো হয়, মাইশা আর বেঁচে নেই। কুড়িগ্রামে নেয়ার পর শিশুটির পেট কাটা দেখতে পায় পরিবার। ছিল ২০টি সেলাই।
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. আহসান হাবীব জানায়, অপারেশনের সময় কার্ডিয়াক এরেস্ট হয়ে যায় তখন ম্যানেজ করতে না পেরে অসম্পূর্ণ অবস্থায় ব্যান্ডেজ করে দ্রুত আইসিইউতে রেফার করা হয়।এ বিষয়ে দায় নিতে নারাজ হাসপাতাল দুটির কর্তৃপক্ষ। দোষ চাপাচ্ছে একে অপরের ওপর। আলম মেমোরিয়াল হাসপাতাল পরিচালক মাসুদুর রহমান বলেন, ডা. আহসান হাবীব নিজেই রোগীকে সেলিনা হাসপাতালে রেফার করেন।
এদিকে হাসপাতালের নিবন্ধনের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালের নিবন্ধন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। গ্লোবাল স্পেশালাইজড হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক নিয়ামত উল্লাহ বলেন, রোগীর অপারেশন পোস্টপন্ড করে তারা আমাদের জানায়, রোগী এখনো বেঁচে আছে আইসিইউ লাগবে, তবে রোগী হাসপাতালে আসার আগেই মারা গেছেন, আর তারা তা গোপন করেছেন। এ ঘটনায় কুড়িগ্রামে বিক্ষোভ করেছেন, মাইশার স্বজনসহ এলাকাবাসী।